আজ || সোমবার, ২০ মে ২০২৪
শিরোনাম :
 


সাতক্ষীরায় ভূমি সহকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মুক্তিযোদ্ধার বন্দোবস্তকৃত সম্পত্তি না দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের ভূমি সহকারি কর্মকর্তার (নায়েব) বিরুদ্ধে এক মুক্তিযোদ্ধার চিরস্থায়ী বন্দোবস্তকৃত সম্পত্তি না দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন কালিগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর গ্রামের মৃত শামসুর আলী মিস্ত্রির ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জেহের আলী মিস্ত্রি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি একজন দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা। আমার মুক্তিযোদ্ধা নং ম-৩৫২২৯। ছোট বেলায় বাবা মারা যাওয়ায় লেখাপড়া শিখতে পারিনি। পেশায় একজন ভ্যানচালক হলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে জেল খাটতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। অতি দরিদ্র হওয়ায় আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিগত ২০০৯ সালে কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন চাম্পাফুল ইউনিয়নের ঘুশুড়ি মৌজায় ২৩ শতক সম্পত্তি ৯৯ বছরের জন্য আমাকে ইজারা প্রদান করেন। সেই অনুযায়ী উক্ত সম্পত্তিতে আমি ভোগদখল শুরু করি। কিন্তু চাম্পাফুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তৎকালিন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা (নায়েব) সুধীন কুমার সরকার একই এলাকার মৃত এছাক শেখের ছেলে কওছার শেখের কাছ থেকে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে ২০১০ সালে কওছার আলী শেখকে ইজারা দেন। এর পর থেকে কওছার আলী ওই সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে আসছে।
তিনি আরো বলেন, এবিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে তাঁরা আমার জমি বুঝে দেয়ার জন্য নায়েবকে নির্দেশ দেন। কিন্তু দুর্নীতিবাজ নায়েব তা না করে আমাকে অনত্রে জমি দেখতে বলেন। অথচ উক্ত সম্পত্তির দলিল আমাদের নামে রয়েছে। নায়েব আমাকে হয়রানি করতে থাকলে আমি ফের জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলে তিনি ইউএনও’কে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেন। ইউএনও পুনরায় আমাকে নায়েবের কাছে পাঠান। এভাবে প্রায় ১১ বছর অতিবাহিত হলেও আমার সম্পত্তি দেয়া হচ্ছে না। উক্ত সম্পত্তির দাগ নং ৫৫৭ হলেও খাজনা দেয়ার সময় জানতে পারি ভূমি অফিসে ৫৫৭ নং কোন দাগ নেই। যে কারনে সাতক্ষীরা এডিসি ও ডিসি মহাদয় দাগ সংশোধনের সুপারিশ করলে উক্ত দাগটি ২০২ দাগে প্রকাশ পায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান টুকুর সাথে দীর্ঘদিন খুলনায় জেল খেটেছি। তিনিও আমার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে সুপারিশ করেছেন। কিন্তু নায়েবের হাত থেকে কোন ভাবেই আমার সম্পত্তি উদ্ধার করতে পারছি না। এই জমির জন্য আমার মত এক জীবন সগ্রামী দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাকে আর কত অপমানিত ও হয়রানি হতে হবে এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি। ওই সম্পত্তি টুকু হাত ছাড়া হয়ে গেলে স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়েকে নিয়ে তাকে পথে বসতে হবে। তিনি তার ইজারা দেয়া সম্পতি উদ্ধারের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।


Top